ঢাকা ০৫:০১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ১২ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
কমলনগরের মেঘনায় তিন নেতার নেতৃত্বে মাছ শিকার রক্ষক যখন রয়েছেন ভক্ষকের ভূমিকায়! কমলনগরে দুর্ধর্ষ চুরি, স্বর্ণালঙ্কারসহ ৫ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট। কমলনগরে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে আনসার বাহিনীর বস্ত্র সামগ্রী বিতরণ। আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে জমি দখলের অভিযোগ। প্রধানের সেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে তোরাবগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের কর্ম বিরতি। কমলনগরে বন্যার্তদের মাঝে জাতীয় পার্টির ত্রাণ বিতরণ। ইউসুফ আলী চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবিতে এলাকাবাসীর বিক্ষোভ।  কমলনগরের আনসার ও ভিডিপির বৃক্ষরোপণ। কমলনগরে আ’লীগ সভাপতিকে গলাটিপে হত্যার চেষ্টা সম্পাদকের লক্ষ্মীপুরে গৃহবধূ হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন।

কমলনগরের মেঘনায় তিন নেতার নেতৃত্বে মাছ শিকার রক্ষক যখন রয়েছেন ভক্ষকের ভূমিকায়!

মো: ইব্রাহীম
  • আপডেট সময় : ১০:৫০:৩৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৬ এপ্রিল ২০২৫ ৪ বার পড়া হয়েছে

কমলনগরের মেঘনায় তিন নেতার নেতৃত্বে মাছ শিকার

রক্ষক যখন রয়েছেন ভক্ষকের ভূমিকায়!

নিজস্ব প্রতিবেদ:জাটকা সংরক্ষণ ও ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে মার্চ-এপ্রিল ২ মাস মেঘনা নদীতে সকল ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। এ সময়  ইলিশসহ সব ধরনের মাছ সংরক্ষণ, আহরণ, পরিবহন, বাজারজাতকরণ ও মজুদকরণ নিষিদ্ধ করা হলেও বাধা মানছেনা জেলেরা। নিষেধাজ্ঞা না মেনে কমলনগরের মেঘনায় প্রকাশ্যে  মাছ ধরতে বাধ্য করছে একটি চক্র। এ চক্র কোস্ট গার্ড ও মৎস্য কর্মকর্তাকে ও সংশ্লিষ্ট থানাকে মোটা অঙ্কের টাকায় ম্যানেজ করে জেলেদের নদীতে নামতে বাধ্য করছেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছেন ।

জানা যায়, কোস্ট গার্ড সকালে নদীতে অভিযানে নেমে দুপুর পর্যন্ত  থাকে। তারা উঠে আসার পর অসাদু তিন বিএনপি নেতার লোক দুপুর থেকে ভোর রাত পর্যন্ত নদীতে মাছ ধরে। ওই মাছ উপজেলা বিভিন্নস্থানে বিক্রি   বিক্রি করছেন জেলেরা।

সরকারের মৎস্য সম্পদ রক্ষায় কোস্ট গার্ড ও মৎস্য অফিস অগ্রণী ভুমিকা পালন করার কথা থাকলেও তাদের ঢিলেমিতে মেঘনায় ইলিশ শূন্য হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

নিষেধাজ্ঞার এ মূহুর্তে প্রতিদিন বিকেল থেকে সারা রাত প্রকাশ্যে মাছ  ধরে উপজেলার বিভিন্নস্থানে বিক্রি  বিক্রি এবং ঢাকা, নোয়াখালী ও চৌমুহনীসহ বিভিন্ন জায়গায় পিকআপ ভ্যান ভর্তি মাছ পাচার করতে দেখা যায়। এ অপকর্মের সাথে  সরাসরি জড়িত উপজেলা যুবদলের সদস্য ও সাহেবেরহাট ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মো.হেলাল, পাটারিরহাট ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক রাজ্জাক তালুকদার ও সাহেবেরহাটের আরেক বিএনপি নেতা বেলাল মাজি।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মতিরহাটের কয়েক জন জেলে জানান,
মতির হাটে হুমায়ুন কবিরেরে নেতৃত্বে, বাচ্ছু মোল্লা,সায়দুল হক বলি,অনোয়ার,,হুমায়ুন মোল্লা সহ রয়েছেন কয়েকজন। বিষয়টি নিয়ে গত কয়েকদিনে মানবজমিনসহ একাধিক জাতীয় দৈনিকে নিউজ হলেও টনক নড়েনি প্রশাসনের। সম্প্রতি ওই রাজ্জাক তালুকদারের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হয়েছে। তাতে দেখা যায়, তিনি কথিত এক সাংবাদিককে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করার চেষ্টা করছেন। ওই ভিডিওতে তিনি দম্ভোক্তির সহিত বলছেন।” আমি রাস্তায় চলি রাজনীতি করি।আমি একটি নেটে ব্যবসা পরিচালনা করতে চাই। দুইটা ঘাট দিয়ে মাছ যায় দুই ঘাটেই আমার উপরে কথা বলার লোক নেই। এছাড়া ওই ভিডিওতে রাজ্জাক তালুকদার আরো বলেন, ওসি ও পুলিশ তিনি ম্যানেজ করার চেষ্টা করছেন। ”

সরজমিনে শনিবার দুপুরে উপজেলার সাহেবেরহাট ইউনিয়নের কাদিরপুন্ডিতের হাট মেঘনা পাড়ে গিয়ে দেখা যায়, কোস্ট গার্ডের একটি টহলরত নৌকা ঘাটে ভিড়ছেন। মাঝ নদীতে ৫-৬টি নৌকা জাল ফেলে বসে আছেন। ওই নৌকাগুলো কার জানতে চাইলে হেলাল মেম্বারের বলে জানান মেঘনা পাড়ের লোকজন।

তাৎক্ষণিক কমলনগর কোস্ট গার্ড কন্টিনজেন্ট কমান্ডার আবুল কালাম আজাদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা এ মাত্র অভিযান শেষ করে তীরে এসেছি। বিকেলে আবার অভিযানে নামবেন তারা।

কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম জানান, গত ২৭ মার্চ আমরা বিএনপি নেতা রাজ্জাক তালুকদারের মাছ ভর্তি পিকআপ আটক করে আদালতের নির্দেশে নিলাম দিয়েছি। এবং ওই মাছ পরিবহনের অভিযোগে ৫ জেলেকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠিয়েছি। আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে।

এ বিষয়ে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো.বিল্লাল হোসেন বলেন, হেলাল মেম্বারসহ জড়িতদের শেষবারের মত নদীতে না নামতে বলা হয়েছে। এরপরও তারা আইন অমান্য করলে কঠিন পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান  তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপলোডকারীর তথ্য

কমলনগরের মেঘনায় তিন নেতার নেতৃত্বে মাছ শিকার রক্ষক যখন রয়েছেন ভক্ষকের ভূমিকায়!

আপডেট সময় : ১০:৫০:৩৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৬ এপ্রিল ২০২৫

কমলনগরের মেঘনায় তিন নেতার নেতৃত্বে মাছ শিকার

রক্ষক যখন রয়েছেন ভক্ষকের ভূমিকায়!

নিজস্ব প্রতিবেদ:জাটকা সংরক্ষণ ও ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে মার্চ-এপ্রিল ২ মাস মেঘনা নদীতে সকল ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। এ সময়  ইলিশসহ সব ধরনের মাছ সংরক্ষণ, আহরণ, পরিবহন, বাজারজাতকরণ ও মজুদকরণ নিষিদ্ধ করা হলেও বাধা মানছেনা জেলেরা। নিষেধাজ্ঞা না মেনে কমলনগরের মেঘনায় প্রকাশ্যে  মাছ ধরতে বাধ্য করছে একটি চক্র। এ চক্র কোস্ট গার্ড ও মৎস্য কর্মকর্তাকে ও সংশ্লিষ্ট থানাকে মোটা অঙ্কের টাকায় ম্যানেজ করে জেলেদের নদীতে নামতে বাধ্য করছেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছেন ।

জানা যায়, কোস্ট গার্ড সকালে নদীতে অভিযানে নেমে দুপুর পর্যন্ত  থাকে। তারা উঠে আসার পর অসাদু তিন বিএনপি নেতার লোক দুপুর থেকে ভোর রাত পর্যন্ত নদীতে মাছ ধরে। ওই মাছ উপজেলা বিভিন্নস্থানে বিক্রি   বিক্রি করছেন জেলেরা।

সরকারের মৎস্য সম্পদ রক্ষায় কোস্ট গার্ড ও মৎস্য অফিস অগ্রণী ভুমিকা পালন করার কথা থাকলেও তাদের ঢিলেমিতে মেঘনায় ইলিশ শূন্য হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

নিষেধাজ্ঞার এ মূহুর্তে প্রতিদিন বিকেল থেকে সারা রাত প্রকাশ্যে মাছ  ধরে উপজেলার বিভিন্নস্থানে বিক্রি  বিক্রি এবং ঢাকা, নোয়াখালী ও চৌমুহনীসহ বিভিন্ন জায়গায় পিকআপ ভ্যান ভর্তি মাছ পাচার করতে দেখা যায়। এ অপকর্মের সাথে  সরাসরি জড়িত উপজেলা যুবদলের সদস্য ও সাহেবেরহাট ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মো.হেলাল, পাটারিরহাট ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক রাজ্জাক তালুকদার ও সাহেবেরহাটের আরেক বিএনপি নেতা বেলাল মাজি।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মতিরহাটের কয়েক জন জেলে জানান,
মতির হাটে হুমায়ুন কবিরেরে নেতৃত্বে, বাচ্ছু মোল্লা,সায়দুল হক বলি,অনোয়ার,,হুমায়ুন মোল্লা সহ রয়েছেন কয়েকজন। বিষয়টি নিয়ে গত কয়েকদিনে মানবজমিনসহ একাধিক জাতীয় দৈনিকে নিউজ হলেও টনক নড়েনি প্রশাসনের। সম্প্রতি ওই রাজ্জাক তালুকদারের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হয়েছে। তাতে দেখা যায়, তিনি কথিত এক সাংবাদিককে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করার চেষ্টা করছেন। ওই ভিডিওতে তিনি দম্ভোক্তির সহিত বলছেন।” আমি রাস্তায় চলি রাজনীতি করি।আমি একটি নেটে ব্যবসা পরিচালনা করতে চাই। দুইটা ঘাট দিয়ে মাছ যায় দুই ঘাটেই আমার উপরে কথা বলার লোক নেই। এছাড়া ওই ভিডিওতে রাজ্জাক তালুকদার আরো বলেন, ওসি ও পুলিশ তিনি ম্যানেজ করার চেষ্টা করছেন। ”

সরজমিনে শনিবার দুপুরে উপজেলার সাহেবেরহাট ইউনিয়নের কাদিরপুন্ডিতের হাট মেঘনা পাড়ে গিয়ে দেখা যায়, কোস্ট গার্ডের একটি টহলরত নৌকা ঘাটে ভিড়ছেন। মাঝ নদীতে ৫-৬টি নৌকা জাল ফেলে বসে আছেন। ওই নৌকাগুলো কার জানতে চাইলে হেলাল মেম্বারের বলে জানান মেঘনা পাড়ের লোকজন।

তাৎক্ষণিক কমলনগর কোস্ট গার্ড কন্টিনজেন্ট কমান্ডার আবুল কালাম আজাদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা এ মাত্র অভিযান শেষ করে তীরে এসেছি। বিকেলে আবার অভিযানে নামবেন তারা।

কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম জানান, গত ২৭ মার্চ আমরা বিএনপি নেতা রাজ্জাক তালুকদারের মাছ ভর্তি পিকআপ আটক করে আদালতের নির্দেশে নিলাম দিয়েছি। এবং ওই মাছ পরিবহনের অভিযোগে ৫ জেলেকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠিয়েছি। আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে।

এ বিষয়ে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো.বিল্লাল হোসেন বলেন, হেলাল মেম্বারসহ জড়িতদের শেষবারের মত নদীতে না নামতে বলা হয়েছে। এরপরও তারা আইন অমান্য করলে কঠিন পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান  তিনি।